তেলাকুচা

গ্রাম-বাংলায় তেলাকুচা ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবেই পরিচিত। ঝোপঝাড়ে বা পরিত্যক্ত জায়গায়, এমনকি খেতখামারের পাশে অযত্নে-অবহেলায় এই উদ্ভিদ বেড়ে ওঠে। এটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। সাধারণত মূল শুকিয়ে যায় না বলে গ্রীষ্মকালে বৃষ্টি হলেই পুরনো মূল থেকে নতুন গাছ জন্মায়।

একে কুচিলা, তেলাকচু, কেলাকচু, তেলাকুচা বিম্বী, তেলাচোরা ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Coccoinia grandis. লতা জাতীয় এই উদ্ভিদটি আকশীর সাহায্যে কোনো অবলম্বনকে বেয়ে বেয়ে বেড়ে ওঠে। এর ফল দেখতে অনেকটা পটলের মতো। পাতা ঠিক পটলের মতো খসখসে না হলেও আকৃতিতে কাছাকাছি। পটলের মতো মাঝামাঝি ভাগ করে ভেজে তেলাকুচার ফল খাওয়া যায়। এর পাতা ও লতা থেকে সুপ তৈরি করা যায়।

বাংলাদেশে এর বাণিজ্যিক চাষ না হলেও নানা দেশে সালাদ ও সবজি হিসেবে বাণিজ্যিক উৎপাদন হয়ে থাকে। বিভিন্ন অঞ্চলে ও দেশে সবজি হিসেবে তেলাকুচার ফল খাওয়া হয়। শুধু ফলই নয়, পাতা এমনকি পুরো গাছ তরকারির উপাদান হিসেবে ব্যবহার হয়। ঠাণ্ডা লাগা, জ্বর, বাথ, ডায়াবেটিস, রুচিবর্ধক ইত্যাদি নানা চিকিৎসায় তেলাকুচা ব্যবহার করা হয়। এখনো গ্রামে বাচ্চাদের ঠাণ্ডা লাগলে কবিরাজরা মাথায় তেলাকুচার পাতা বসিয়ে দেন। এর ফুল দেখতে লাউ ফুলের মতো সাদা।

সারাবছরই ফুল ও ফল দেখা গেলেও বর্ষায় ফুল-ফলের দেখা অধিক মেলে। পাখির অন্যতম প্রিয় খাদ্য তেলাকুচা। বিশেষ করে বুলবুলি, বসন্তবাউরি, শালিক, বেনেবউ ইত্যাদি পাখিকে প্রায়ই তেলাকুচার ঝোপঝাড়ের পাশে ঘুরতে দেখা যায়। কাচায় সবুজ কিন্তু পাকলে টকটকে লাল এই ফল তাই পাখিদের অত্যন্ত পছন্দের। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //